রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৩ পূর্বাহ্ন
আমতলী সংবাদদাতা: নিজের বিয়ে বন্ধ করার জন্য গোপনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানায় আমতলীর গুলিশাখালী ইসহাক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী শিপ্রা।সোমবার (৬ মে) সকালে উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের গুলিশাখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।শিপ্রা উপজেলার ওই গ্রামের পুনিল চন্দ্র মিস্ত্রির কন্যা। সে গুলিশাখালী ইসহাক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে অধ্যায়নরত।
জানা গেছে, শিপ্রাকে না জানিয়ে গোপনে তার বাবা পুনিল চন্দ্র মিস্ত্রি মেয়ের বিয়ের প্রস্তুতি নেয়। সোমবার বর পক্ষের লোকজন শিপ্রার বাড়িতে আসার দিনক্ষণ ঠিক হয়। শিপ্রা বাবার পছন্দের বিয়েতে রাজি হয়নি।গোপনে সে নিজের বিয়ে বন্ধ করার জন্য আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সরোয়ার হোসেনকে জানায়। খবর পেয়ে আমতলী ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কমলেশ মজুমদার ঘটনাস্থলে গিয়ে বাল্যবিয়ে দেয়ার প্রস্তুতির সত্যতা পায়।
মেয়ের অমতে বাল্যবিয়ের প্রস্তুতির অপরাধে বাবা পুনিল চন্দ্র মিস্ত্রিকে তিন হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেন। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। পরে সাহসী শিপ্রাকে গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামের হেফাজতে রেখে আসেন।যতদিন পর্যন্ত শিপ্রার বিয়ের উপযুক্ত বয়স না হবে ততদিন পর্যন্ত চেয়ারম্যান তার দেখাশুনার দায়িত্ব নিয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
সাহসী শিপ্রা বলে, আমার এখন লেখাপড়া বয়স। এই বয়সে আমি আমার মূল্যবান জীবনটাতে অপাত্রে দান করতে পারবো না। বাবা আমার অমতে বিয়ের প্রস্তুতি নেয়। আমি জানতে পেরে বাবার মতের বিরুদ্ধে গিয়ে বিয়ে বন্ধের জন্য উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। তারা গিয়ে আমার বিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন।
বাবা পুনিল চন্দ্র মিস্ত্রি নিজের ভুলের কথা স্বীকার করে বলেন, আমার মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে উপযুক্ত পাত্রের কাছে বিয়ে দেব।গুলিশাখালী ইসহাক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, শিপ্রা আমার বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির মানবিক বিভাগের ছাত্রী। শিপ্রার সাহসিকতার জন্য আজ থেকে ওর লেখাপাড়ার যাবতীয় খরচ বিদ্যালয় বহন করবে।গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম শিক্ষার্থী শিপ্রার সাহসিকতার প্রশংসা করে বলেন, যতদিন পর্যন্ত বিয়ের উপযুক্ত বয়স না হবে ততদিন পর্যন্ত আমার হেফাজতে রেখে ওর লেখাপড়া চালিয়ে নেব।
আমতলী ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কমলেশ মজুমদার বলেন, শিপ্রা নিজের বিয়ে বন্ধের জন্য উপজেলা প্রশাসনকে খবর দেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে শিপ্রাকে বাল্যবিয়ে দেয়ার প্রস্তুতির অপরাধে বাবা পুনিল চন্দ্র মিস্ত্রিকে তিন হাজার টাকা জরিমান, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছি।আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সরোয়ার হোসেন বলেন, শিপ্রা নিজের বিয়ে বন্ধের জন্য আমার কাছে খবর দেয়। খবর পেয়ে ভ্রাম্যমান আদালত পাঠিয়ে বিয়ে বন্ধ করে দিয়েছি।
Leave a Reply